অনলাইনে কাজ পাওয়ার সহজ উপায়!

এই পোস্টে আমি আমার ব্যক্তিগত ফ্রিল্যান্সিং লাইফের অভিজ্ঞতা শেয়ার করব। কীভাবে আমি ফাইভার, আপওয়ার্কের মতো মার্কেটপ্লেসগুলোতে কোনো কাজ না করে, গত ৫ বছরে অসংখ্য ফ্রিল্যান্সিং প্রজেক্ট কমপ্লিট করেছি, সেই কাহিনিই বলব আজ! আমার ব্যবহার করা, অনলাইনে কাজ পাওয়ার সহজ উপায় গুলো জানতে চাইলে অবশ্যই পুরো পোস্টটি পড়তে হবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

অনলাইনে কাজ পাওয়ার সহজ উপায়:

আমি আমার লাইফে যত ফ্রিল্যান্স ওয়ার্ক করেছি তার মধ্যে মাত্র একটা ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস থেকে! তাও আবার ফাইভার, আপওয়ার্ক এসব থেকে না! বাংলাদেশি মার্কেটপ্লেস কাজকী থেকে মোবাইল মায়া সাইটে আর্টিকেল লেখার কাজ নিয়েছিলাম। ওটা মাত্র ৪০০০ টাকার প্রজেক্ট ছিল।

এটা বাদে আমার সমস্ত কাজ ফেসবুক, ইউটিউব আর লিংকডইন থেকে অটোমেটিক আসা। শুধু ফেসবুক থেকে আমি কয়েক লক্ষ টাকার কাজ করেছি এই কয় বছরে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার- কোনো কাজের ক্ষেত্রেই আমি ক্লায়েন্টের সাথে নিজে যোগাযোগ করিনি। ক্লায়েন্টই নিজে থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করেছে!

এখন আপনাদের প্রশ্ন জাগতে পারে- ভাই, কীভাবে সম্ভব? সম্ভব! পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং থাকলে সবই সম্ভব।

আমার অনলাইনে কাজ পাওয়ার মূল কারণগুলো হলো:

১। আমার টেক নিশের ইউটিউব চ্যানেল আছে! ওই চ্যানেলে খুব অল্প হলেও, বেশ অনেক জন লয়াল অডিয়েন্স আছে। যারা আমার ক্লায়েন্ট হয় কিংবা ফ্রিতেই আমাকে বিভিন্ন ক্লায়েন্টের কাছে রেফার করে।

২। ফেসবুকে ডিজিটাল মার্কেটিং, অনলাইনে আয়, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি টপিকে আমাদের মোট ৩টা গ্রুপ আছে। এই ৩টা গ্রুপেও আমার মোটামুটি একটা অডিয়েন্স বেস ছিল, আছে। এর মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং কমিউনিটি গ্রুপের এঙ্গেজমেন্ট অন্যগুলোর চেয়ে ভালো। এই গ্রুপগুলো থেকেও আমার অনেক কাজ এসেছে।

৩। লেখালেখি করার সুবাধে আমার ফেসবুক আইডিতে সারাদেশের অসংখ্য মানুষের ভর্তি [আগে ৫কে ফ্রেন্ড ভর্তি ছিল, এখন ২৫০০+]। আর আমি আইডিতে অলটাইম ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড, আমার কাজ রিলেটেড আপডেট দিতে থাকি! ফলে আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডদের কাছে, আমার ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ইমেজ ক্রিয়েট হয়ে গেছে। এটাও আমার কাজ পেতে বেশ সাহায্য করে।

৪। এ ছাড়া আমার ফেসবুক গ্রুপে কেউ হেল্প পোস্ট করে আমার কমেন্ট পায়নি, এরকম কেউ আছে বলে আমার মনে হয় না। এই কাজটা আমি শুধু আমাদের গ্রুপেই করি না; ফেসবুকে বড়ো বড়ো ফ্রিল্যান্স কমিউনিটি গ্রুপেও সবসময় সবাইকে সলিউশন দেওয়ার চেষ্টা করি সময় পেলে। এর ফলে গ্রুপ থেকেই অনেক ক্লায়েন্ট আমাকে খুঁজে পেয়েছে।

৫। আর সবচেয়ে ইমপর্ট্যান্ট ফ্যাক্টর- আমার কাছে ইনবক্সে হেল্প চেয়ে হেল্প পায়নি, এমন কেউ আছে, দেখাতে পারবে না। তো, যারাই আমার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে, তারা ক্লায়েন্টের কাছে আমাকে সাজেস্ট করেছে। মজার ব্যাপার হলো- আমি নিজে ফাইভার আপওয়ার্ক ইত্যাদি মার্কেটপ্লেসে কাজ না করেও- অসংখ্য মানুষকে এসব মার্কেটপ্লেস রিলেটেড হেল্পও করেছি।

৬। আমার অনেক স্কুল-কলেজ ফ্রেন্ড, ফেসবুক ফ্রেন্ডও অনেক সময় ক্লায়েন্টের কাছে আমাকে সাজেস্ট করেছে!

অথচ আমার নিজের নামে একটা ফেসবুক পেজ নাই! একটা পোর্টফোলিও সাইট নাই! [অবশ্য শীঘ্রই আসবে এই দুইটা!]। পেজ ও সাইট খোলার পর হয়তো আমার কাজের সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে।

সো, সবশেষে বলব- ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে যত বেশি ইফেক্টিভলি পারুন স্কিল ডেভেলপ করুন, সেই সাথে স্যোশাল মিডিয়াসহ যেকোনো প্ল্যাটফরমে নিজের ব্র্যান্ডিং করুন বেশি বেশি! পার্সোনাল ব্র্যান্ডিংয়ের ওপর কোনো কথা নাই! স্কিলড হওয়ার পর, ওপরে যেসব বিষয় শেয়ার করলাম ওগুলো ফলো করার চেষ্টা করুন। আশা করি, আপনার কাজের অভাব হবে না।


তো, প্রিয় পাঠক আজকের পোস্ট এই পর্যন্ত। পোস্টটি ভালো লাগলে পরিচিত বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। কোনো কিছু না বুঝলে কিংবা ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন। এ ধরনের আরও পোস্ট পেতে টেকভার্সে চোখ রাখুন।

Share This:

Leave a Reply:

Scroll to Top