ওয়ার্ডপ্রেস পরিচিতি পর্ব: ০১

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। টেক ভার্স এর আরেকটি নতুন আর্টিকেলে আপনাদের স্বাগতম জানাচ্ছি। জনপ্রিয় কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা সিএমএস গুলোর মধ্যে ওয়ার্ডপ্রেস অন্যতম। আজকের আর্টিকেলে ওয়ার্ডপ্রেস এর খুটিনাটি সম্পর্কে আলোচনা করবো। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।

ওয়ার্ডপ্রেস কি?

ওয়ার্ডপ্রেস একটি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। ওয়ার্ডপ্রেস এর দুটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, একটি ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম, অন্যটি ওয়ার্ডপ্রেস ডট ওআরজি। ওয়ার্ডপ্রস সম্পূর্ণ ফ্রি এবং কোন সাবক্রিপশন ফি এর প্রয়োজন হয় না। ফ্রিতে ওয়ার্ডপ্রেস এর সকল থিম ও প্লাগিন ব্যবহার করা যায়।

ওয়ার্ডপ্রস কিভাবে ইন্সটল করবো?

২ টি পদ্ধতিতে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করা যায়। এক সি প্যানেল থেকে ম্যানুয়ালি ইন্সটল এবং দুই সি প্যানেল থেকে সরাসরি ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল।

ম্যানুয়ালি ইন্সটল: ওয়ার্ডপ্রেস ম্যানুয়ালি ইন্সটল করার জন্য প্রথমে আপনাকে ওয়ার্ডপ্রেস ডট ওআরজি থেকে ওয়ার্ডপ্রস ডাউনলোড করতে হবে। এরপর সি প্যানেল থেকে ফাইল ম্যানেজার এ প্রবেশ করতে হবে। ফাইল ম্যানেজার থেকে public.html ফোল্ডারে প্রবেশ করতে হবে। এবার ডাউনলোড করা ওয়ার্ডপ্রস ফাইল টি আপলোড করে দিতে হবে।

সরাসরি ইন্সটল: সরাসরি ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করার জন্য সি প্যানেল থেকে ওয়ার্ডপ্রেস এ ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার পর কিছু প্রতোজনীয় তথ্য দিয়ে ইন্সটল এ ক্লিক করলেই ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল হয়ে যাবে।

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে কিভাবে থিম ইন্সটল করবো?

ওয়েবসাইটে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করার পর সবার প্রথমে মাথায় আসে ওয়েবসাইটের থিম। খুব সহজেই ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে থিম ইন্সটল করা যায়। থিম ইন্সটল করার জন্য প্রথমে ওয়ার্ডপ্রস এডমিন প্যানেলে লগইন করতে হবে। লগিন করার পর ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাশবোর্ড এর এপিয়ারেন্স থেকে থিমে ক্লিক করতে হবে। এবার এড নিঊ এ ক্লিক করে সার্চ বক্সে আপনার কাঙ্ক্ষিত থিমের নাম সার্চ করে ইন্সটলে ক্লিক করলেই থিম টি ইন্সটল হয়ে যাবে। এবং ইন্সটল এর পর এক্টিভ এ ক্লিক করলে থিম টি আপনার ওয়েবসাইটে লাইভ হয়ে যাবে। এছাড়াও থিম ফাইল ডাউনলোড করা থাকলে আপলোড থিমে ক্লিক করে থিম টি আপলোড করে এক্টিভ করা যাবে।

কিছু কথা, সি প্যানেল থেকে ম্যানুয়ালি ও থিম ইন্সটল করা যাবে। সি প্যানেল থেকে থিম ইন্সটল করার জন্য প্রথমে সি প্যানেলের ফাইল ম্যানেজারে প্রবেশ করতে হবে। ফাইল ম্যানেজার থেকে public.html, Public.html থেকে wp-content, wp-content থেকে theme এ প্রবেশ করে ডাউনলোড করা থিম ফাইল টি আপলোড করতে হবে। তবে আপলোড করা থিম টি এক্টিভ করতে চাইলে আপনাকে ওয়ার্ডপ্রস ড্যাশবোর্ড এর থিম থেকেই এক্টিভ করতে হবে।

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে কিভাবে প্লাগিন ইন্সটল করবো?

প্লাগিন কাজ কে সহজ থেকে সহজতর করে দেয়। ওয়ার্ডপ্রস ওয়েবসাইটে প্লাগিন সুবিধার জন্য ওয়ার্ডপ্রস ইউজার এর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাশবোর্ড থেকে খুব সহজেই প্লাগিন ইন্সটল করা যাবে।

প্লাগিন ইন্সটল করার জন্য প্রথমে ওয়ার্ডপ্রেস এডমিন থেকে ড্যাশবোর্ডে যেতে হবে। এরপর প্লাগিন থেকে এড নিঊ এ ক্লিক করতে হবে। আপনার কাঙ্ক্ষিত প্লাগিন নাম সার্চ করে ইন্সটল ও এক্টিভে ক্লিক করলে আপনার প্লাগিন টি ওয়েবসাইটে এক্টিভ হয়ে যাবে। নিচে বহুল ব্যবহৃত কিছু প্লাগিন এর নাম ও ব্যবহার উল্লেখ করা হলো।

ক্লাসিক এডিটর: আপনি যদি পোস্ট করার জন্য একটি সুন্দর ইন্টারফেজ চান তাহলে ক্লাসিক এডিটর এর বিকল্প নেই। ক্লাসিক এডিটর এর ইন্টারফেজ আপনার বহুল ব্যবহৃত ওয়ার্ড এর ইন্টারফেজ এর চেয়েও ইউজার ফ্রেন্ডলি।

কন্টাক ফ্রম সেভেন: আপনারা হয়তো অনেকেই জানেই ব্লগারে কন্টাক ফ্রম তৈরি করার জন্য নানা ধরণের কোডিং করতে হয়। কিন্তু এই প্লাগিন টির শর্ট কোড ব্যবহার করে আপনারা খুব সহজেই আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে কন্টাক পেজ বা কন্টাক ফ্রম তৈরি করতে পারবেন।

সাইট কিট: সাইট কিট একটি গুগলের প্লাগিন। আপনি যদি গুগল্লের সকল পরিশেবা একটি প্লাগিন এর মাধ্যমে খুব সহজেই এনাবল ও ব্যবহার করতে চান তাহলে সাইট কিট এর বিকল্প নেই। সাইট কিটের সাহায্যে আপনারা গুগল সার্চ কন্সোল, গুগল এনালাইটিক্স, গুগল এডেসেন্স সহ গুগলের সকল পরিষেবা ব্যবহার ও ম্যানেজ করতে পারবেন। এছাড়াও যাদের ওয়েবসাইটে এডসেন্স বা সার্চ কন্সোল এর কোড মিসিং দেখায় তারা কোন প্রকার কোড ছাড়াই সাইট কিটে এসব এনাবল করতে পারবেন।

ইয়োস্ট বা র‍্যাঙ্ক ম্যাথ: ওয়েবসাইট বা কোন পোস্ট র‍্যাংকিং এর পিছনে সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখে এসইও। গুগলে আর্টিকেল র‍্যাংকিং এ এসইও এর বিকল্প নেই। ইয়োস্ট বা র‍্যাঙ্ক ম্যাথ আর্টিকেলের অন-পেজ এসইও তে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

টেবিলপ্রেস: আমরা যখন কোন রিভিউ ব্লগ পড়ি তখন আমরা দেখি ব্লগের মাঝে বা কোন অংশে সুন্দর করে একটা টেবিলে সব স্পেসিফিকেশন বা ভালো দিক – মন্দ দিক সাজানো থাকে। ব্লগারে টেবিল তৈরি করতে কোডিং করতে হয় কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে টেবিলপ্রেস প্লাগন ব্যবহার করে আপনারা খুব সহজেই টেবিল তৈরি করতে পারবেন।

ডব্লিউপি রকেট: ওয়েবসাইটের র‍্যাংকিং ও আর্ণিং এর পিছনে সাইট স্পীড বিশেষ ভূমিকা রাখে। ডব্লিউপি রকেট একটি ক্যাশ প্লাগিন যেটা ব্যবহার করে আপনারা আপনাদের ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের স্পীড বুস্ট করতে পারবেন।

ক্লাসিক উইজেড: এই প্লাগিন টি ওয়ার্ডপ্রেস এর সর্বশেষ আপডেট এর আগে খুব একটা ব্যবহার করা হতো না। কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস এর সর্বশেষ আপডেটের পর থেকে উইজেডের ইন্টারফেজ পুরোপুরি ভাবে পাল্টে যায়। এই ক্লাসিক উইজেড প্লাগিন ব্যবহার করে উইজেট এর ইন্টারফেজ আগের মত করা যাবে। যা আপনার কাজকে অনেক টা সজজ থেকে সহজতর করে দিবে।

গুগুল ফন্ট প্লাগিন: অনেক সময় ওয়ার্ডপ্রেস বা থিমের ডিফল্ট ফন্ট অনেকের ভালো লাগে না। এছাড়াও অনেকে তাদের নিজস্ব ভাষার জন্য কাস্টম ফন্ট ব্যবহার করতে চায়। গুগল ফন্ট প্লাগিন ব্যবহার করে আপনি আপনার ইচ্ছেমত ফন্ট আপনার ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়াও বাংলা ফন্ট এর জন্য আপনারা বাংলা ফন্ট প্লাগিন বা বাংলা ওয়েব ফন্ট নামের প্লাগিনটি ব্যবহার করতে পারেন।

ওয়ার্ডপ্রেস পরিচিতি পর্ব: ০১ এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী পর্বে মেনু, পেজ, সাবমেনু, ফুটার মেনু, পার্মালিঙ্কস, টাইম জোন, ভাষা সহ আরও বেশ কিছু টপিক সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

আশাকরি ওয়ার্ডপ্রেস পরিচিতি নিয়ে আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে সোসাল মিডিয়া বা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই, দেখা হবে পরবর্তী আর্টিকেলে, ধন্যবাদ।

Share This:

Leave a Reply:

Scroll to Top