অনলাইন থেকে আয় করার সেরা ৫টি উপায়!

বর্তমান ডিজিটালাইজেশনের যুগে সারাবিশ্বেই অনলাইনে কাজ খুবই জনপ্রিয়। পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ মানুষ, অনলাইন থেকে আয় করে জীবিকা নির্বাহ করছে! অনলাইন সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়া তুলনামূলকভাবে সহজ হওয়ায় অফলাইন জবের চেয়ে তরুণরা এদিকে ঝুঁকছে বেশি! তবে সমস্যাও আছে! নতুন যারা অনলাইন সেক্টরে আসে, তারা কনফিউজড হয়ে যায়- কোন স্কিল ডেভেলপ করবে, কোন কাজটা শিখবে, কোন সেক্টরে কাজ শুরু করবে এসব ভেবে ভেবে! কারণ, এই সেক্টরটা বিশাল বড়ো, এখানে কাজের ধরনের অভাব নেই! তাই সন্দিহান হওয়াটাই স্বাভাবিক! তো, নতুন যারা অনলাইন সেক্টরে আসার প্ল্যান করেছে, তাদের জন্যই আমাদের আজকের পোস্ট। এই পোস্টে আমরা- অনলাইন থেকে আয় করার সেরা ৫টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব! চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

অনলাইন থেকে আয় করার সেরা ৫টি উপায়

ফ্রিল্যান্সিং

অনলাইন থেকে আয় করার সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় উপায় হলো ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং করে বর্তমানে বিশ্বের অসংখ্য মানুষ, এমনকি বাংলাদেশিরাও মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করে! ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাইলে, আপনাকে প্রথমে কোনো স্কিল ডেভেলপ করতে হবে অর্থাৎ কোনো একটা সেক্টরের কাজ খুব ভালো মতোই শিখে নিতে হবে। এরপর আপনি মার্কেটপ্লেসে ক্লায়েন্টকে সেই কাজ রিলেটেড সার্ভিস দিতে পারবেন! কয়েকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং স্কিল হলো- আর্টিকেল রাইটিং, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট, এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি। এর মধ্যে যেকোনো একটা স্কিল আপনি গেইন করতে পারলে, সেই কাজে মোটামুটি এক্সপার্ট হয়ে গেলে, আপনার কাজের অভাব হবে না।

ব্লগিং

আপনার যদি লেখালেখির অভ্যাস থাকে, আর্টিকেল রাইটিং পারেন, তাহলে ব্লগিং সেক্টরেও ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস কিংবা ব্লগারে সাইট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট মোটামুটি পারেন, ডোমেইন হোস্টিং নিজে নিজে সেটাপ করা শিখেন, এসইও মোটামুটি পারেন; সেক্ষেত্রে কারও কোনো প্রকার সাহায্য ছাড়াই আপনি একা একা নিজের ব্লগ দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারবেন! একটা সাকসেসফুল ব্লগ থেকে বিভিন্ন উপায়ে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আর ব্লগিং করলে আপনাকে কারও অধীনস্ত হয়ে কাজ করতে হবে না, নিজের কাজ নিজের মর্জি মতো করবেন; নিজেই নিজের বস!

ইউটিউবিং

আপনার যদি নিজেই নিজের বস হওয়ার ইচ্ছে থাকে, তাহলে ব্লগিং এর পর ইউটিউবিং হলো আপনার জন্য বেস্ট চয়েজ। কারণ ইউটিউবে ক্যারিয়ার গড়লেও আপনি নিজের কন্টেন্ট নিজের ইচ্ছেমতো বানাবেন, কারও অর্ডারে চলতে হবে না! ব্লগিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে আর্টিকেল লিখে লেখার মাধ্যকে কাউকে কোনো ইনফর্মেশন জানাতে হবে, ইউটিউবে সেই সেম কাজটাই করতে হবে ভিডিয়ো কন্টেন্ট বানিয়ে! অবশ্য ইউটিউবে ভিডিয়ো বানানোর জন্য আরও বেশ কিছু নিশ রয়েছে। আপনি যদি ইউটিউবিং এ মোটামুটি অভ্যস্ত হয়ে যান তাহলে আপনি ফেসবুকেও কন্টেন্ট বানানো শুরু করতে পারেন! কারণ এখন ফেসবুক ভিডিয়ো মনিটাইজ করেও ইউটিউবের মতো ইনকাম করা যায়! তো, ভিডিয়ো কন্টেন্টে আগ্রহ থাকলে এই ইউটিউব ও ফেসবুক এই দুই প্ল্যাটফর্ম হতে পারে আপনার জন্য টাকার খনি।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়ে মার্কেটিং মানে হলো- আপনি অন্য কোম্পানি কিংবা বিজনেসকে আপনার অডিয়েন্সের কাছে প্রোমোট করে তাদের জন্য সেলস বা লিড জেনেরেট করে তার বিনিময়ে কোম্পনি বা বিজনেস থেকে একটা পার্সেন্টেজ কমিশন নেওয়া। আপনার স্ট্যাবল ব্লগ সাইট কিংবা পপুলার ইউটিউব চ্যানেল থাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজটা খুবই ইজি হয়ে যায়! এ ছাড়া অন্যান্য পদ্ধতির চেয়ে, যেমন ব্লগে ও ইউটিউবে গুগল অ্যাডসেন্স থেকে যে রেভেনিউ আসে, তার চেয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ বেশি প্রফিট পাওয়া যায়! ব্লগ, ইউটিউব ছাড়াও আপনি ফেসবুক প্রোফাইল, ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার সহ অন্যান্য স্যোশাল মিডিয়ায় বিগ অডিয়েন্স তৈরির মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে বেশ ভালো পরিমাণ আয় করতে পারেন।

ডিজিটাল অ্যাসেট বাই-সেল

অনলাইনের যেকোনো কিছুকে অ্যাসেট হিসেবে রূপান্তরিত করে, সেগুলা বাই সেল করেও আপনি বেশ ভালো আয় করতে পারেন। যেমন- আপনি কাজ করে একটা ব্লগ সাইট মোটামুটি দাঁড় করালেন, মনিটাইজ করলেন; এরপর আর সময় দিতে কষ্ট হচ্ছে! সেই সাইট আপনি বড়ো অংকের টাকায় ২০-৫০ হাজার টাকায় সেল করে দিতে পারেন! অথচ সেই সাইটের পেছনে আপনার ইনভেস্ট থাকবে মাত্র ২-৩ হাজার টাকা সর্বোচ্চ। আপনি মাত্র ১০০০ টাকার মধ্যে একটা ভালো, ব্র্যান্ডেবল ডোমেইন নেম কিনে সেট ৫-১০ হাজার টাকায় সেল করতে পারেন! এভাবে ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক গ্রুপ, ফেসবুক পেজ, ফেসবুক প্রোফাইল, ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট, টুইটাল অ্যাকাউন্ট, কোনো পপুলার গেমের অ্যাকাউন্ট সবকিছুই কিন্তু সেল করা যায়! বর্তমানে বাংলাদেশে অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভড ওয়েবসাইট বাই-সেলের মার্কেট বেশ হাইপে আছে! চাইলে এটা নিয়েও কাজ করতে পারেন।

ডিজিটাল অ্যাসেট সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এই ভিডিয়োটি দেখতে পারেন:


তো, প্রিয় পাঠক, এই ছিল অনলাইন থেকে আয় করার সেরা ৫টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত! তবে একটা কথা বলে রাখি, পৃথিবীতে কোনো কাজেই কষ্ট ছাড়া আপনা আপনি সফলতা আসে না! তো, ওপরের কাজগুলো সফলতা পেতে চাইলে আপনাকেও ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করে যেতে হবে; তবেই সফল হতে পারবেন!

পোস্টটি ভালো লাগলে পরিচিত বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। কোনো কিছু না বুঝলে কিংবা আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন। এ ধরনের আরও পোস্ট পেতে টেকভার্সে চোখ রাখুন।

Share This:

Leave a Reply:

Scroll to Top